কেন এই প্রকল্প?

তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্যান্সার সেবায় আমাদের গ্রাম প্রকল্পের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে যা দেশে-বিদেশে বিশেষভাবে সমাদৃত হয়েছে। গত ১২ বছর যাবত বৃহত্তর খুলনা অঞ্চলে আমাদের গ্রাম প্রকল্প যুক্তরাষ্ট্রের বিশিষ্ট চিকিৎসকবর্গ ও বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় ক্যান্সার-সহ অন্যান্য অসংক্রামক রোগ নির্ণয় ও পরামর্শ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের নিজস্ব ইলেকট্রনিক মেডিক্যাল রেকর্ড ব্যবস্থা রয়েছে যাতে ২০১০ সাল থেকে এ যাবত সেবাপ্রাপ্ত সকল রোগীর বিস্তারিত সেবার বিবরণ নথিভুক্ত আছে যা সম্পূর্ণ নিরাপদ ও সুরক্ষিত।


কোভিড-১৯ ভাইরাস সংক্রমণের বাস্তবতায় এই প্রকল্প পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরবর্তীকালের পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে আমাদের গ্রাম প্রকল্পের এই ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবা পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে যাতে দেশের মানুষ যথাসম্ভব বাড়িতে থেকে ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সাশ্রয়ী মূল্যে একটি উপযুক্ত স্বাস্থ্য সেবা পেতে পারে। 


আমরা সবাই জানি যে, এই মারাত্মক ভাইরাস মানুষের স্বাভাবিক দৈনন্দিন জীবনে এক ব্যাপক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে মানুষকে ভবিষ্যৎ দুনিয়ায় বেঁচে থাকতে হবে কারণ বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন এই ভাইরাসের ও মানুষ-পরিবেশ-প্রকৃতির সহ-অবস্থান এখনও সুদূরপ্রসারী গবেষণার বিষয় কারণ ভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাঁচার উপায় হিসেবে এন্টিবডি নিশ্চিত হতে, টিকা আবিষ্কার ও তার প্রয়োগের যথার্থ ফলাফল পেতে ও চিকিৎসা কৌশল হাতে পেতে যথেষ্ট সময়ের প্রয়োজন হবে। ফলে জীবন ও জীবিকা এখন এক বড়ো রকমের দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়েছে ও পৃথিবীব্যাপী চিকিৎসাবিজ্ঞানী, অর্থিনীতিবিদ ও সমাজবিজ্ঞানীগণ এর প্রতিকার খুঁজছেন।


যেহেতু আমাদের গ্রাম প্রকল্প বাংলাদেশের একটি নির্ধারিত ভৌগোলিক অঞ্চলে স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় কাজ করে থাকে ও গ্রামাঞ্চলে তথ্য-প্রযুক্তি জনপ্রিয়করণ ও সম্প্রসারণে এই প্রকল্পের একটি ঐতিহ্যপূর্ণ ভূমিকা আছে ফলে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে যে, উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে এই প্রকল্প সম্পূর্ণ তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে কাজ করবে। প্রকল্পের সকল কর্মী তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারে পারদর্শী ও প্রকল্পের নিজস্ব উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধা রয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের জন্যে মাইক্রোসফটের নিরাপদ স্বাস্থ্য সেবা মাধ্যম ‘টীমস হেলথকেয়ার’ ব্যবহারের অনুমতি আছে যা সেবাপ্রার্থীর সকল ব্যাক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা বজায় রাখতে সহায়ক। বিশেষ করে দেশের স্বনামধন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকবর্গ ও প্রবাসী বাংলাদেশী অনেক চিকিৎসক এই প্রকল্পের সাথে সম্পৃক্ত হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ও ইতোমধ্যে অনেকেই সম্পৃক্ত হয়েছেন যার পরিধি ক্রমশ বাড়ছে। 


এছাড়া এই প্রকল্প ‘বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল’ প্রণীত ‘টেলিমেডিসিন গাইডলাইন ২০২০’ অনুসরণ করে কাজ করছে।